মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : শেষবারের মতো ফিরলেন তার প্রিয় সোনাগাজীতে। যে পিচঢালা রাস্তা, গ্রামের শ্যামল পথে পায়ে হেঁটে মাদরাসা থেকে ফিরতেন বাড়িতে, সে পথেই ফিরলেন নিজ ভূমে। নিথর দেহে, লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে। সাইরেন বাজিয়ে। লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন যেন বাজছিল প্রতিবাদের কণ্ঠ হয়ে। জীবন দিয়ে প্রতিবাদ করে নুসরাত জানান দিলেন মানুষ মরলেও প্রতিবাদের ভাষা মরে না।
অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার অন্যায় অবিচারের প্রতিকার চেয়ে থানা-পুলিশে গিয়েছিলেন নুসরাত। মাদরাসা কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছিলেন।
তখন কেউ সাড়া দেয়নি। গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু সন্ত্রাসের আগুনে লাশ হওয়া নুসরাতের শেষ বিদায়ে সাড়া দিয়েছে সোনাগাজীর হাজার হাজার মানুষ। তারা যেন নুসরাতের প্রতিবাদেরই সঙ্গী। হাজারো মানুষ ভালবাসা আর অশ্রুজলে শেষ বিদায় জানিয়েছে প্রতিবাদী নুসরাতকে। নুসরাতের এই শেষ যাত্রায় সঙ্গী পুরো দেশ। পুরো দেশের মানুষ। সবার মুখে মুখে বর্বর এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ। বিচারের দাবি। প্রতিবাদী মানুষজন বলছেন, জীবন দিয়ে নুসরাত প্রতিবাদের যে দ্বীপ শিখা জ্বেলে গেলেন তা হাল সময়ে নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
গতকাল বিকালে সোনাগাজী সাবের মোহাম্মদ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাদির কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে নুসরাত জাহান রাফিকে। নিজের মাদরাসা অধ্যক্ষের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হয়ে মামলা করার কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে অগ্নি সন্ত্রাসের শিকার হন নুসরাত জাহান। আগুনে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার পর ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বুধবার রাতে না ফেরার দেশে চলে যান নুসরাত। গতকাল সকালে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে লাশ নিয়ে সোনাগাজীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন নুসরাতের স্বজনরা। এদিকে সকাল থেকে নুসরাতের গ্রামের বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন স্বজন ও এলাকাবাসী। বিকালে লাশবাহী গাড়ি গ্রামে পৌঁছার পর এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। কান্নার রোল পড়ে বাড়িজুড়ে। অস্বচ্ছল পরিবারে বেড়ে ওঠা নুসরাত চেয়েছিলেন উচ্চ শিক্ষা শেষে পরিবারের হাল ধরতে। আলীম পরীক্ষা শেষে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করতে যাওয়ার কথা ছিল। স্বপ্ন ছিল একদিন বাবা-মায়ের কষ্ট ঘোঁচাবেন, পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু এই স্বপ্নচারি তরুণীর কষ্টের জীবন কষ্টেই শেষ হলো। বিকাল পাঁচটা নাগাদ তার মরদেহ বহনকারী গাড়িটি চর চান্দিয়ায় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।
প্রিয় কন্যার লাশ নিয়ে ঘরে ফিরলেন বাবা একেএম মূসা মানিক। অশ্রুসজল নয়নে কন্যাহারা পিতার সাথে কথা বলবার ভাষা ছিল না কারো মুখে। নুসরাতের বাবাকে শুধু দু’হাতে জড়িয়ে ধরে বুকে টেনে নেন স্বজন, প্রতিবেশিরা। তাতেও শোক যদি কিছুটা কমে। নুসরাতের দুই ভাই রায়হান ও নোমান বোনের শোকে সংজ্ঞা হারাচ্ছিল বারবার। বোনহারা ভাইদের শোকে যেন পাথর চাপা পড়েছে পুরো বাড়িতে। যে পুলিশ, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা বেঁচে থাকতে নুসরাতকে নিরাপত্তা দিতে পারেননি তারা ছিলেন সজাগ। চর চান্দিয়া ছোট হুজুরের বাড়িতে নুসরাতদের উঠোন উপচে পড়া মানুষের ঢল।
তবে, স্বজন ও প্রতিবেশি ছাড়া কাউকে নুসরাতের লাশ দেখতে দেয়া হয়নি। নুসরাতকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে আসা মানুষদের চাপ সামলাতে বেগ পেতে হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের। প্রাণহীন নুসরাতকে নিয়ে তাদের এমন তৎপরতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। এলাকাবাসী ও নুসরাতকে দেখতে আসা জনগণ প্রশ্ন তোলেন, প্রতিবাদ জানানোর পরও পুলিশ প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো পরিকল্পিত আগুন লাগানোর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন বিক্ষুব্ধ অনেকে। সে সময় উদ্যোগ নিলে হয়তো আজ আর নুসরাতের পৃথিবী ছেড়ে যেতে হতো না। তবে, এরপরও নুসরাত হত্যার ন্যায়বিচার চান এলাকাবাসী। বাদ আছর সোনাগাজী সাবের মোহাম্মদ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজায় অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ। তার আগে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার, সোনাগাজী ইউএনওসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি।
নুসরাতের বাবা তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মেয়ের পাশে থাকার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চিকিৎসায় সব ধরনের সহায়তা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। নুসরাত হত্যার বিচারের জন্য শেষ অবধি লড়ে যাওয়ার কথা বলেন তার ভাই নোমান। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাঝখানে নুসরাতের হত্যার বিচার নিয়ে কথা উঠলে হাত তুলে সোচ্চার আওয়াজ তোলেন উপস্থিত জনতা। বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে মেয়ের জানাজা পড়ান বাবা একেএম মূসা মানিক। সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিট নাগাদ চর চান্দিয়া ভূঞা বাড়ি পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় সোনাপুর ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে। গত শনিবার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। গত ২৭শে মার্চ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করায় তার ওপর এ হামলা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। গুরুতর অগ্নিদদ্ধ নুসরাতকে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আনা হয়। তাকে বাঁচাতে ৫ দিন প্রাণান্ত চেষ্টা চালান চিকিৎসকরা। তার চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় মারা যান নুসরাত।
মর্গে স্বজনদের কান্না
আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, জরুরি বিভাগের মর্গ থেকে কেন্দ্রীয় মর্গে নুসরাতের লাশ আনা হয় সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে। লাল কাপড়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়া হয় নুসরাতের মরদেহটি। এরপর সাড়ে ৯টার দিকে মর্গে আসেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। এর পরপরই আসেন নুসরাতের এলাকা সোনাগাজীর চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন। তিনি বলেন, নুসরাতের পরিবার সুরক্ষিত। তার পরিবারের ওপর নেই কোন চাপ। তিনি বলেন, সোনাগাজীতে যারা ঘাতক শিক্ষকের পক্ষে মিছিল করেছে বা মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে নুসরাতের সুরতহাল প্রতিবেদন পেশ করেন শাহবাগ থানার এসআই শামসুর রহমান। ১১টার দিকে মর্গ চত্ত্বরে আসেন নুসরাতের বাবা একে এম মুসা মানিক। এসময় তার কান্নায় ভারি হয়ে উঠে পরিবেশ। তিনি বলেন, আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। দেশের আইন অনুযায়ী হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচার চাই। বিচার না হলে আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে না। এছাড়াও তিনি তার মেয়ের খোঁজ রাখার জন্য সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতার কথা বারবার উল্লেখ করেন। কথা বলার মাঝে তিনি ফের কাঁদতে শুরু করেন।
লাশকাটা ঘরের পাশের ঘরে বসে বোনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। এদিকে বোনের শোকে বারবার মোর্চা যান ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান। নোমান বলেন, আমাদের ঘরের দেয়ালগুলো নুসরাতের দেয়াল লিখনে ভরা। যখনই ইচ্ছে হতো বাসার হার্ডবোর্ডে কলম কিংবা পেন্সিল দিয়ে আপন মনে লিখতেন ‘মা আমার চোখের মনি’। নুসরাত মাকে প্রচন্ড ভালোবাসতো। কোনো কারণ ছাড়াই মাকে জাড়িয়ে ধরতেন। ছোট বাচ্চাদের মতো মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে থাকতেন। মেহেদী পরতে খুব ভালোবাসতো নুসরাত। ও অনেক সুন্দর করে হাতে মেহেদীর আল্পনা আঁকতো। আমাদের একমাত্র বোন হওয়াতে কোনো কিছু বলার আগেই আমরা তা নিয়ে আসতাম। ওর কোনো চাহিদা আমরা অপূর্ণ রাখিনি। নুসরাত দুধ’চা খেতে প্রচন্ড ভালোবাসতো।
মর্গে সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার, কেন্দ্রীয় নেতা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে ধর্মীয় লেবাসের কারণে অনেকে নানা ধরণের অন্যায় করে থাকেন। আর এই অন্যায়গুলো করে তারা বারবার পার পেয়ে যান। যার ফলে ধীরে ধীরে বড় অন্যায়ের দিকে ধাবিত হয় তারা।
বেলা ১২ টার কিছু সময় আগে ৩ জন চিকিৎসকের নেতৃত্বে শুরু হয় ময়না তদন্তের কাজ। শেষ হয় ১২টা ১৪ মিনিটে। নুসরাতের ময়না তদন্তের জন্য গঠিত বোর্ডের প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. সোহেল মাহমুদের সঙ্গে ছিলেন বোর্ডের দুই সদস্য প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস ও প্রভাষক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস। সাড়ে ১২টার দিকে নুসরাতের কফিন নিয়ে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স ফেনীর সোনাগাজীর উদ্দেশে রওনা দেয়।
নুসরাত হত্যাকান্ডে জড়িতরা বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকান্ডে জড়িত কেউ-ই বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না। গতকাল সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পিবিআই তদন্ত করছে, দ্রুত চার্জশিট দেয়া হবে। ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় এবং অপরাধে সহযোগিতার অভিযোগে প্রত্যাহার হওয়া সোনাগাজীর ওসিসহ যারাই জড়িত ও দোষী তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। নুসরাত হত্যাকান্ডের ঘটনায় দোষী কেউ-ই বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় যারা অভিযুক্ত সিরাজ উদ্দৌলার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করছেন, হয়তো তারা না জেনে করছেন। তদন্তসাপেক্ষে বিস্তর জানা যাবে। এদিকে নুসরাত হত্যাকান্ডের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নুসরাতের মামলা প্রয়োজনে ট্রাইবু্রনালে স্থানান্তর: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসা অধ্যক্ষের নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলাটি প্রয়োজনে দ্রুত বিচার ট্রাইবু্রনালে স্থানান্তর করা হবে। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক একথা বলেন। তিনি বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে মামলাটি দ্রুত বিচারে যাবে। এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্নের প্রয়োজন হবে না জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে একটি অভিযোগপত্র দিতে হবে। আমি আপনাদের বলছি এ রকম মামলা যখনই হবে এটাকে ফাস্ট ট্রাক করবে। আমি প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেব, যাতে এটাকে ফাস্ট ট্রাক করা হয়। কোনো প্রশ্নেরও প্রয়োজন হবে না। এর আগে ১০৮ ঘণ্টা আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় মারা যান ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।
নুসরাতের অগ্নিসংযোগকারীদের শাস্তি দাবি করেছে আওয়াজ
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির শরীরে অগ্নিসংযোগকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন আওয়াজ। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আওয়াজের সভাপতি সেলিমা রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ড. শাহিদা রফিক এ দাবি জানান। বিবৃতিতে তারা বলেন, মাদরাসা ছাত্রী নুসরাতকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নুসরাতের এই মৃত্যু কোনও সভ্য সমাজে মেনে নেয়া যায় না। আর কোন নুসরাতকে যেন এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে না হয় সেজন্য আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, নুসরাত পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও প্রতিবাদী কন্ঠস্বর হিসাবে বিজয়ীনির বেশে দৃপ্ত মহিমায় বিরাজ করছে আমাদের মাঝে, সারা বাংলাদেশে, সারা বিশ্বে।
নুসরাত নারীর অপমানকে প্রত্যাখান করে আমাদের চেতনাবোধকে উন্মোচিত করেছে, মানবতার জাগরন ঘটিয়েছে। তার এ প্রতিবাদীকন্ঠ এবং বলিষ্ঠ প্রতিবাদ এক উদাহরন হয়ে থাকবে। তারা নুসরাতের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সংগঠনের সভাপতি সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. শাহিদা রফিক, আওয়াজের সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. তাজমেরী এস ইসলাম, সেলিনা রউফ, ফাতেমা সালাম, লায়লা বেগম, ফরিদা ইয়াসমিন, অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ, ওয়াহিদা আক্তার মুক্তা ও নাফিয়া লায়লা প্রমুখ।